এ জগতে প্রকৃতি মানবের কল্যাণে কি অবদান রাখে তা কি আমরা একবার হৃদয় দিয়ে ভেবে দেখিছি? একবার আপনার অপরূপ নয়ন দু’টো কয়েক মিনিটের জন্য বন্ধ করে দেখুন তো? এবার আপনার কোমল হৃদয়ের চোখ দিয়ে ভাবুন তো কোথায় ছিলেন? কিভাবে এলেন এই সুন্দর অপরুপ সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা এই বৈচিত্রময় পৃথিবীতে কে আপনাকে, আমাকে এই পৃথিবীতে আনলেন? কেনই বা আমাকে, আপনাকে তিনি সৃষ্টি করিলেন? কি ছিল তার উদ্দ্যেশ্য? নিশ্চই কোন মহৎ উদ্দ্যেশ্য রয়েছে। আপনাকে আমাকে মায়ের গর্ভে লালন পালন, ভূমিষ্ট শিশু, কৈশর, যৌবন, বৃদ্ধ বয়সে পরিনত হওয়া এসবই তো তার অবদান। অপরুপ পৃথিবীতে মানবের কল্যাণে মহান সৃষ্টিকর্তা আলো, বাতাস, নদী নালা, সাগর মহাসাগর, পাহাড় পর্বত, গাছ পালা, কীট পতঙ্গ মানুষ, পশু পাখি, আর ও নানা বিধ, মানুষের কল্যাণে সবই সৃষ্টি করেছেন। মানুষের এই কল্যাণে প্রকৃতি তার জীবন যৌবন সব উজাড় করে দেয় নিঃ স্বার্থ ভাবে অনুরুপভাবে আমরা কি প্রকৃতির সব ঋনের প্রতিদান দিতে পারি? নিশ্চই না, তাহলে কি আমরা প্রকৃতির কাছে দায় বহুতা রয়েছি কি? প্রকৃতির এসব দায়বদ্ধতা কিছুটা হলেও পরিশোধ করিতে পারি না? যদি আমাদের হৃদয়ের চোখ দিয়ে একবার অন্তর অন্তস্থ দিয়ে অনুভব করি তাহলে নিশ্চই প্রকৃতির দান কিছুটা হলেও পরিশোধ করা যায়। স্বামী বিবেকানন্দ্র দাস এর উক্তি জীবে প্রেম করে যে জন সে জন সেবীবে ঈশ্বর” আমরা যদি একটি বারের জন্য চিন্তা চেতনার পরিবর্তন ঘটাতে পারি, তাহলে মানবতার বিকাশ ঘটবে বলে আমার বিশ্বাস।
এ পৃথিবীতে কেন এত যুদ্ধ, বৈষম্য, ভেদা-ভেদ, দ্বন্দ্ব এসবের মূল কারণ কি? স্বাভবিক ভাবে আমারা দু চোখ দিয়ে পৃথিবী দেখি কিন্তু প্রকৃত পক্ষে মানুষের চোখ তিন টি আমরা আমাদের হৃদয়ের চোখ দিয়ে কখনো কি কিছু অনুভব করি? একবার আপনার অন্তরের চোখ দিয়ে অবলোকন করুন তো? প্রকৃতি প্রতিনিয়ত মানবের কল্যাণে তার নিজের জীবন যৌবন নিঃস্বার্থ ভাবে আমাদের মাঝে বিলিয়ে দিচ্ছে। এটা কার নিদের্শে সে এই কাজ করে চলছে। তার এই নিদের্শ দাতা কে? নিশ্চই বলতে হবে মহান সৃষ্টি কর্তা। দিঘা রাত্রি তিনিই সংগঠিত করেন। নিঃসন্দেহে স্বীকার করতে হবে সমগ্র পৃথিবীর মালিক মহান আল্লাহ। প্রকৃতি কারো ওপর রাগ হিংসা নিজের স্বার্থে কোন কাজ করেন না। সে আল্লাহর নিদের্শ প্রতি মুহুর্তে পালন করে চলছে। কোথাও তার কোন কার্পণ্যতা নেই তাহলে আমরা সৃষ্টি সেরা জীব হিসাবে আমরা কি পারি না? প্রকৃতির ন্যায় মানবতার কল্যাণে নিজের জীবন বিলিয়ে দিতে? আমরা আমাদের সাংসারিক জীবনে কাজ কর্ম করতে করতে এক সময় আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখি, প্রকৃতি এক সময় মহান সৃষ্টিকর্তার নিদের্শে তার সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ করে দিবে, তখন সমগ্র পৃথিবী হারাবে তার ভাঁসাম্য গতি। মূহুর্তের মধ্যে চারিদিক অন্ধকারে পরিনত হবে। মানুষ পশুপাখি কীট পতঙ্গ জীব জন্ত হারাবে তার নীড়। নদী হারাবে তার গতি ধংস প্রাপ্ত হবে পৃথিবী। সময় হারিয়ে গেলে যেমন আর কি ফিরে পাওয়া যায়।
মহান আল্লাহ সৃষ্টির প্রতি মহানুভবতা, প্রেম ভালবাসা, মায়া মমতা এবং সর্বপরি প্রকৃতির নিঃস্বার্থ দানের প্রতিদান হিসাবে আমরা কি আমাদের সকল ভেদা ভেদ ভুলে গিয়ে এ সুন্দর পৃথিবীতে সকল ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হৃদয়ের কোমল নয়ন দিয়ে প্রকৃতির অবদান কে বরণ করে নিতে? আসুন সকল জাতী ধর্ম বৈষম্য ভুলে সৃস্টির সেরা জীব হিসাবে পরিচয় বহাল রেখে, সকল দ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়ে যার যার অবস্থানে থেকে, শান্তি শৃংখলা ও কল্যাণময় বাস যোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলি। এই হোক আমাদের সকলের প্রত্যাশা, আমি সকল জাতীর মঙ্গল কামনা করি, দীর্ঘ জীবি হোক পৃথিবী।
লেখক ও কলামিস্ট মোঃ মহসিন শেখ।