স্বজনদের কবরগুলোর উপরে জ্বলছে শত শত মোমবাতি, এতে ছড়িয়েছে রুপালী আলো। সুগন্ধি ছড়াচ্ছে সহস্র আগরবাতির ধুঁয়া। কবরগুলোতে ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে তাজা ফুলের পাঁপড়ি। প্রিয়জনেরা তাদের নিজ নিজ স্বজনের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে মৃত ব্যক্তির আত্মার চিরশান্তির জন্য প্রার্থনা করছেন।
আজ শনিবার নাটোরের সদর, বড়াইগ্রাম, লালপুর, বাগাতিপাড়া, সিংড়া উপজেলার বিভিন্ন খ্রিস্টান ধর্মপল্লীতে পালন করা হয় ‘অল সোলস ডে’ যাকে বাংলায় বলা হয় ‘মৃতলোকের পার্বন’ অর্থাৎ মৃত স্বজনের শান্তি কামনায় ‘আলোকময় প্রার্থনা’। সারা বিশ্বের খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছর নভেম্বর মাসের ২ তারিখে এই বিশেষ দিনটি যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্যের মধ্য দিয়ে পালন করে। এ দিন মৃত ব্যক্তির শান্তি কামনায় সমাধিতে এসে বিশেষ প্রার্থনা করেন স্বজনেরা।
এ উপলক্ষে জেলার সর্ববৃহৎ খ্রিস্টান ধর্মপল্লী বড়াইগ্রামের বনপাড়ার লুর্দের রাণী মা মারীয়া ক্যাথলিক কবরভূমিতে বিশেষ খ্রিস্টযাগের আয়োজন করা হয়। ‘সংসারের মায়া ছেড়ে আজিকে গেল যে জন; দাও প্রভু, দাও তারে, অনন্ত জীবন…’ এই প্রার্থনা সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে বিকেল ৪টায় শুরু হয় বিশেষ খ্রিস্টযাগ। এতে স্থানীয় সহস্রাধিক খ্রিস্টধর্ম বিশ্বাসীরা একত্রে প্রার্থনা করেন। প্রধান পাল-পুরোহিত ফাদার দিলীপ এস কস্তা খ্রিস্টযাগে মূল প্রার্থনা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সহযোগী ছিলেন ফাদার পিউস গমেজ।
খ্রিস্টযাগ শেষে কবরসমূহ আশীর্বাদ করেন উপস্থিত যাজকগণ। পরে সন্ধ্যায় কবরগুলোতে পবিত্র আলো ছড়িয়ে দিতে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় শত শত মোমবাতি। পবিত্রতার সুগন্ধি ছড়াতে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় আগরবাতি।