রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫১ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সালথায় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালিত শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, মৃত্যু বেড়ে ৭ আজ সন্ধ্যায় টি-টোয়েন্টিতে নামছে বাংলাদেশ-ভারত গিগাবাইট অরাস এক্স৮৭০ ও এক্স৮৭০ই মাদারবোর্ড: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার শক্তি দিয়ে কম্পিউটিংয়ের নতুন যুগের সূচনা উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পেলেন শিউলী রোজা শিক্ষক শিক্ষার্থীদর মেরুদণ্ড, আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস পলিথিন বন্ধে অধিদপ্তর-ম্যাজিস্ট্রেট মিলে টিম হচ্ছে উপস্থাপক হিসেবে হাজির হচ্ছেন অপু বিশ্বাস ১৮ অঞ্চলের নদীবন্দরে সতর্কতা বিপিএলে সাকিবের খেলা নিয়ে যা বলছে রংপুর বাংলাদেশের সোনার খনি হচ্ছে ইলিশ সম্পদ : ফরিদা আখতার টাকায় থাকবে না শেখ মুজিবের ছবি, নতুন নোট নকশার প্রস্তাব সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক অমিতাভের নতুন কাজে পূজা চেরি আক্কেলপুরে সবুজে ছেয়ে গেছে আমনের বিস্তীর্ণ মাঠ পাইকগাছায় বাড়ির মালিক ও রাজমিস্ত্রীর বউ বদল রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপন পাইকগাছায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন নান্দাইল সাংবাদিক সমিতি(বাসাস) কমিটি গঠিত সভাপতি খসরু ও সম্পাদক হাবিব প্রশাসনের মধ্যে ‘স্বৈরাচারের ভূত’ বসে আছে : বিএনপি সাতক্ষীরা সীমান্তে শুটারগান ও গুলি উদ্ধার ঘাটাইলে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত টানা বৃষ্টিতে ফের ডুবছে নোয়াখালী, পানিবন্দি ১২ লাখ মানুষ মুরাদনগরে সাংবাদিকতার মানোন্নয়ন শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ফুলবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি হলেন করিম সরকার স্ত্রী হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে শরণখোলায় দূর্গা পূজা পালন উপলক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসনের সভা অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল অবহেলিত থাকবে না : ক্রীড়া উপদেষ্টা মালয়েশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে চাই: প্রধান উপদেষ্টা সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র ৭ দিনের রিমান্ডে

পোশাকশিল্পের সক্ষমতা বাড়াতে হবে

মো. মহিউদ্দিন রুবেল
বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০২৪, ৮:০১ অপরাহ্ন

সম্প্রতি পোশাকশিল্প নিয়ে যারা ভাবেন ও গবেষণা করেন, এমন কতিপয় অভিজ্ঞ ব্যক্তির সঙ্গে এই শিল্পের মূল অগ্রাধিকারগুলো নিয়ে আলাপ-জালোচনা করার সুযোগ লাভ করেছি। তারা এই শিল্পকে স্বাভাবিক গতিধারায় ফিরিয়ে আনা এবং নিকট ভবিষ্যতে বিশ্বে শীর্ষস্থান অর্জনের জন্য এর প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। বৈশ্বিক ফ্যাশন বাজারে নেতৃত্ব প্রদানে আমাদের আরো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে মনোযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।

বিশেষ করে এই মুহূর্তে কাস্টমস প্রক্রিয়াগুলো সহজীকরণ করা দরকার। প্রতিযোগিতায় আরো সক্ষমতা অর্জনের জন্য পণ্য খালাসের সময়সীমা ১০-১৫ দিন থেকে কমিয়ে আনা অত্যাবশ্যক। শনিবারসহ সপ্তাহে ছয় দিন শুল্ক কার্যক্রম চালু রাখা হলে এবং কায়িক পদ্ধতিতে বিরাজমান প্রতিবন্ধকতাগুলো কমিয়ে ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রবর্তন বরা হলে দক্ষতা বাড়বে। গাজীপুরের মতো শিল্প অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে পণ্য পরিবহনে অহেতুক সমক্ষেপণ কমাতে এবং সময়মতো ডেলিভারি নিশ্চিত করার জন্য সড়কগুলোর সংস্কার ও উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ। উন্নত বন্দর সুবিধা এবং নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহসহ সামগ্রিক লজিস্টিক অবকাঠাময় খাতে উন্নয়ন করা দরকার। এতে পোশাকশিল্পের আমদানি-রপ্তানিসহ সকল কার্যক্রম নির্বিঘ্নভাবে সম্পাদন করা সহজ হবে।

এই শিল্পে আমাদের অটোমেশন ও ডিজিটালাজেশন বাবদ বিনিয়োগ বাড়াতে হবে৷ আধুনিক উৎপাদন প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমগুলো গ্রহণ করে উৎপাদন দক্ষতা বাড়ানো যেতে পারে। কায়িক শ্রমের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস করা যেতে পারে। এই শিল্পকে তা উচ্চ মূল্য সংযোজিত পল্য উৎপাদনে রূপান্তরিত হতে সহায়তা করতে পারে। প্রবৃদ্ধির সহায়তার জন্য পরিবহন নেটওয়ার্ক ও জ্বালানি সরবরাহের মতো অবকাঠানোগুলোর ক্রমাগত উন্নয়ন অপরিহার্য। টেকসই জ্বালানি সমাধানে বিনিয়োগ করা ও বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধার আধুনিকীকরণ দীর্ঘমেয়াদি প্রতিযোগিতায় অবদান রাখতে পারে।

কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপরও আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। বিশেষ করে ভাষা, যোগাযোগ ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়ানো গেলে তা একদিকে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করবে, অন্যদিকে এ ক্ষেত্রগুলোতে বিদেশি নাগরিকদের ওপর শিল্পের নির্ভরশীলতা হাস পাবে। ফলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে। এছাড়া নিরাপদ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং ন্যয্য মজুরি, সুবিধা ও সুরক্ষার মাধ্যমে কর্মীদের কল্যাণ বাড়ানো খুবই গুরুতপূর্ণ বিষয়। কর্মীদের অধিকারগুলো সমুন্নত রাখা এবং কারখানা ব্যবস্থাপনা ও ট্রেড ইউনিয়নের মধ্যে নিয়মিত সংলাপের ব্যবস্থা থাকলে তা একটি স্থিতিশীল ও অনুপ্রাণিত কর্মীবাহিনী বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

এই শিল্পে পণ্যের অফারে বৈচিত্র্য আনতে হবে। স্পোর্টসওয়্যার, টেকনিক্যাল অ্যাপারেল ও বিশেষায়িত পোশাকের মতো উচ্চমূল্যের পণ্যের ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর গতানুগতিক স্বল্পমূল্যের পণ্য উৎপাদনের ওপর শিল্পের নির্ভরতা কমিয়ে দেবে। ফেব্রিক ও উপকরণে উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় দিতে হবে। রপ্তানি পণ্য পরিবেশবান্ধব ও টেকসই ফেবিক্সের ব্যবহার শুধু বৈশ্বিক মানই পূরণ করবে না, বরং বৈশ্বিক ফ্যাশন বাজারে টেকসই পোশাকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিতে সহায়তা করবে। এজন্য সুশাসন ও সরকরি নীতিসহায়তা নিশ্চিত করতে হবে। এই শিল্পের প্রবৃদ্ধির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও একটি নিরপেক্ষ ব্যবসায়িক পরিবেশ অপরিহার্য। শিল্পের জন্য দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও সহায়তা নিশ্চিত করতে ব্যাংক, শুল্ক ও কর বিভাগে সংস্কার আনাও প্রয়োজন। এছাড়া বৈশ্বিক মানের সঙ্গে সংগতি রেখে কমপ্লায়েন্স প্রতিপালন করতে হবে। বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য উৎপাদন, শ্রম অধিকার ও পরিবেশগত সাসাটেইনেবিলিটি প্রভৃতি ক্ষেত্রে আন্তর্জতিক মান বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত়পূর্ণ।

প্রকৃতপক্ষে বৈশ্বিক বাজারে একটি নির্ভরযোগ্য সরবরাহকরী হিসেবে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডকে আরো শক্তিশালী করা প্রয়োজন। সাসটেইনেবিলিটির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জনগুলো তুলে ধরতে হবে। যেমন সবুজ শিল্পায়নে বাংলাদেশের নেতুত্ব প্রদনসহ এগিয়ে যাওয়া আশাব্যঞ্জক একটি দিক। এই প্রচারণা এথিক্যাল সোর্সিং গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি করবে।

এসব পদক্ষেপের পাশাপাশি ন্যায্যমূল্য নির্ধারণের জন্য চাপ দিতে হবে। স্বল্পমূল্যের উৎপাদন মডেল থেকে দূরে সরে গিয়ে এমন একটি উৎপাদন মডেলে যেতে হবে, যেখানে উচ্চ মূল্য সংযোজিত পণ্য থাকবে এবং উচ্চ মজুরি প্রদান ও উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য ন্যায্যমূল্যও থাকবে, যা প্রকারান্তরে এখানে দক্ষ কর্মীদের আকর্ষণ করবে ও তাদের এই শিলে ধরে রাখবে।

সামাজিক ও নৈতিক বিবেচনাকেও এখানে প্রাধান্য দিতে হবে। দুর্নীতি দমন, ব্যাবসায়িক কার্যক্রম ও সরকারি প্রক্রিয়াগুলোতে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে এবং আরো আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের আকৃষ্ট করবে। নিয়োগকর্তা এবং কর্মীদের মধ্যে নিয়মিত সম্পৃক্ততা, নৈতিক শ্রম অনুশীলনগুলোর কঠোরভাবে প্রতিপালন এই শিল্পকে সামাজিক বাধ্যবাধকতাগুলো পূরণে সহায়তা করবে এবং বিশ্বব্যাপী শিল্পের সুনাম বৃদ্ধি করবে।

অন্যদিকে নতুন ও উদীয়মান বাজারে রপ্তানি সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজন উন্নত কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ এবং নেগোশিয়েশন দক্ষতা। উচ্চ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাময় অপ্রচলিত বাজারগুলোতে মনোযোগ প্রদান প্রচলিত বাজারগুলোর ওপর নির্ভরতা হ্রাস করবে এবং প্রচলিত বাজারগুলোর ওপর একতরফাভাবে নির্ভর করার ঝুঁকিও কমিয়ে দিবে। এছাড়া সাপ্লাই চেইনকে শক্তিশালী করা, বিশেষ করে লিড টাইম কমিয়ে ও দক্ষতা বৃদ্ধি করে, বিশ্ব বাজারে প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখা অপরিহার্য। এর মধ্য রয়েছে সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সর্বোত্তম অনুশীলনগুলো গ্রহণ এবং উৎপাদন অপটিমাইজ করার জন্য প্রযুক্তির সুবিধা গ্রহণ করা।

লেখক : মো. মহিউদ্দিন রুবেল
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিভত ব্যবস্থাপনা পরিচালক।


এই বিভাগের আরো খবর