শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে পরীক্ষামূলকভাবে সি-ট্রাক চলাচল শুরু নববর্ষ উদযাপনে নবীনগরে ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল মোটরসাইকেল আরোহীর কাপ্তায়ে বিএসপিআই সাধারণ শিক্ষার্থীদের গণমিছিল ফিলিস্তিনের সমর্থনে মার্চ ফর গাজা – লালমোহনে সর্বদলীয় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ লালমনিরহাটে মধ্যরাতে বাংলাদেশী যুবকের মরদেহ ফেরত দিলো ভারতীয় বিএসএফ সাংবাদিক মালেকের মা আর নেই পাইকগাছায় বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সাংগঠনিক সভা অনুষ্ঠিত নবীনগরে মাইটিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত শরণখোলা প্রেসক্লাবে জামায়াতে ইসলামী নেতা অধ্যক্ষ আলীমের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার রোধে এনজিও কর্মীদের ভূমিকা পালনের আহবান মোহনগঞ্জের প্রান্তিক কৃষকদের পাঁচশ’ গবাদিপশুকে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান ‎দুর্গাপুরে বালুবাহী ট্রাকের ধাক্কায় ভ্যানচালক নিহত, আহত ২ নবীনগরে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে বিদায় সংবর্ধনা নান্দাইলে মাদক, জুয়া ও ইভটিজিং রোধকল্পে উপজেলা নাগরিক ফোরামের মানববন্ধন সিরাজগঞ্জে পাট চাষীদের প্রশিক্ষণ, পাটবীজ ও সার বিতরণ মুকসুদপুর উপজেলা ছাত্রদলের আয়োজনে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের মাঝে পানি ও কলম বিতরণ বীরগঞ্জে ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠিত নান্দাইলে সেবা ফাউন্ডেশন এর আয়োজনে হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ছাগল বিতরণ নেছারাবাদে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে হাটের ইজারা তুলতে বাধা দেয়ার অভিযোগ ভৈরবে  ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ও মিথ্যা মামলার আসামী হলেন নিরীহ অটোচালক দম্পতি  পাইকগাছায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে ঘের দখল ও লুটপাটের অভিযোগ সালথায় ২৫টি মামলার আসামী মাসুদসহ ডাকাত দলের ৫ সদস্য আটক ১৪৩২ বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে শ্রীপুরে বিএনপির বিশাল বৈশাখী শোভাযাত্রা ফরিদপুরে স্ত্রীর হাতের পুতাে’র আঘাতে স্বামী নিহত কর্ণফুলীতে ৫ টাকা বেড়েছে ঘাট ভাড়া; বিপাকে পড়েছেন এই পথে চলাচলকারী যাত্রীরা জামালপুরে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে মাকে হত্যা: প্রধান আসামি ছেলে গ্রেফতার কাপ্তাইয়ে মৎস্য বিভাগ কর্তৃক ১০০ টি ছাগল বিতরণ ঘাটাইলে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ লালমনিরহাটে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হত্যা, আটক ১

নাটোরের ১১৫ বছর বয়সী অন্ধ রহমান বাঁশ ও দড়ি বেয়ে মসজিদে যাচ্ছেন ১৩ বছর ধরে

অমর ডি কস্তা, নাটোর
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৮:২৩ অপরাহ্ন

১১৫ বছর বয়স তার। নাম আব্দুর রহমান মোল্লা। বয়সের ভাড়ে কাঁপা গলায় কথা বললেও মসজিদের মাইকে আযান দেওয়ার সময় সেই আযানের ধ্বনিতে খুঁজে পাওয়া যায় না তার আসল বয়সটা। লাঠিতে ভর করে হাঁটে সে। লাঠির মাধ্যমে পথ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করে সে। গ্রামের মসজিদে গিয়ে নিয়মিত আযান দেওয়া ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার জন্য পথ ঠিকই তৈরি করে নেন দৃষ্টিহীন আব্দুর রহমান মোল্লা। পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় বাড়ি থেকে মসজিদ পর্যন্ত বাঁশ বেঁধে ও দড়ি টেনে নেন তিনি। এরপর সে বাঁশ ও দড়ি ধরে ধরে ও বেয়ে বেয়ে মসজিদে যান। মাইক চালিয়ে আযান দেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ইমামতিও করেন তিনি। এভাবেই চলছে দীর্ঘ ১৩ বছর।

মুয়াজ্জিন আব্দুর রহমান মোল্লা নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার নগর ইউনিয়নের বড়দেহা গ্রামের সবচাইতে প্রবীণ ব্যক্তি। প্রায় ১৯ বছর আগে এক দুর্ঘটনায় তিনি তার দুই চোখের দৃষ্টি হারান। তার পরিবারে রয়েছে দুই স্ত্রী ও ২৫ জন ছেলে-মেয়ে। তাদের মধ্যে ৬ সন্তান মারা গেছে এবং বর্তমানে তার ১০ মেয়ে, ৯ ছেলে ও দুই স্ত্রী বেঁচে রয়েছেন। সকল সন্তানদেরই প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। করিয়েছেন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত। তাদের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে শিক্ষক, কৃষি কর্মকর্তা, চিকিৎসক, সৈনিক, ব্যবসায়ী এবং গেরস্তের কাজ করেন এমনও রয়েছে। অন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে বড় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে ২০১১ সালে তিনি পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেন।

হজ্ব পালন করে আসার পর নিজ গ্রামে নিজস্ব পাঁচ শতাংশ জমির ওপর তিনি তৈরি করেন একটি পাকা মসজিদ। ছেলে-নাতিন, আতœীয়-স্বজন ও গ্রামের মানুষদের নিয়ে ওই মসজিদে নামাজ আদায় শুরু করেন। ২০১১ সালেই তিনি বাড়ি থেকে মসজিদ পর্যন্ত বাঁশ ও দড়ি টেনে নেন যাতে তা বেয়ে বেয়ে নিয়মিত মসজিদে যাতায়াত করতে পারেন। তিনি তখন থেকেই ওই মসজিদের অবৈতনিক মুয়াজ্জিন হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

আব্দুর রহমান মোল্লা’র ছেলে আলহাজ্ব মো. শফিকুল ইসলাম সাইফুল (মাস্টার) বলেন, ২০০৫ সালে একটি দুর্ঘটনায় আমার বাবা অন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ৫ বছর বিভিন্ন জায়গায় বাবাকে চিকিৎসা করানোর পরেও বাবার চোখে আলো ফিরিয়ে আনতে পারি নাই। পরে ২০১১ সালে বাবাকে নিয়ে হজ্বব্রত পালন করতে যাই। হজ্ব পালন শেষে বাবা গ্রামেই একটি মসজিদ স্থাপন করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। বসত বাড়ি থেকে ২০০ মিটার দূরে নিজস্ব জমিতে মসজিদ স্থাপন করার পর সেখানেই বাবা মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সেখানেই আদায় করেন। বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে বাড়ি থেকে বাঁশ ও দড়ি টেনে দেওয়া হয় মসজিদ পর্যন্ত। প্রথমে প্রায় ১৫ দিন ছেলে ও নাতিরা বাঁশ ও দড়ি দেখিয়ে দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত পৌঁছে দিতেন তাকে। পরে বাঁশ কিংবা দড়ি খুঁজে পাওয়ার জন্য হাতে একটি লাঠিও দেওয়া হয়। তারপর থেকে তিনি নিজেই রাস্তা পার হয়ে বাঁশ ও দড়ি বেয়ে মসজিদে নিয়মিত যাতায়াত করে আসছেন।

আরেক ছেলে রফিকুল ইসলাম (মাস্টার) বলেন, আমার বাবার বয়স চলছে ১১৫ বছর। এই বয়সে এসেও অন্ধ হয়ে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আযান দেন এবং নামাজ আদায় করেন। বাবার এমন মহৎ কাজে আমরা পরিবারের সকলেই অনেক খুশি। আমরা সকল ভাই-বোন বাবাকে নেয়ে গর্ববোধ করি।

দৃষ্টিহীন মুয়াজ্জিন আলহাজ্ব মো. আব্দুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘মহান আল্লাহ পাক আমাকে এখনও অনেক সুস্থ ও স্বাভাবিক রেখেছেন। মহান আল্লাহ আমার ইচ্ছে পূরণ করেছেন’। তিনি জানান, বাঁশ ও দড়ি বেয়ে মসজিদে যেতে তার খারাপ লাগে না। যদিও রাস্তা পারাপারের সময় ঝুঁকি থাকে তারপরেও তিনি বিশ্বাস করেন আল্লাহ তাআলা তাকে হেফাজতেই তার গন্তব্যে পৌঁছে দিবেন। বাকি জীবন তিনি এভাবেই ইসলামের পথে থেকেই মৃত্যুবরণ করতে চান। তিনি সকল মুসলমানদের নামাজের দাওয়াতও দিয়েছেন।

নগর ইউপি চেয়ারম্যান শামসুজ্জোহা সাহেব জানান, আলহাজ¦ মো. আব্দুর রহমান মোল্লা ১১৫ বছর বয়সে এসে এবং অন্ধ হিসেবে প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্তে¡ও যে ভাবে তার মানসিক দৃষ্টি সচল ও মনোবল দৃঢ় রেখেছেন তাতে মহান আল্লাহ পাকের অশেষ ও বিশেষ কৃপা রয়েছে। তার এই অদ্যম শক্তি দেখে এবং তা উপলদ্ধি করে অনেকেই ইসলামী জীবন যাপনে অনুপ্রাণিত হবে নিশ্চয়ই।


এই বিভাগের আরো খবর