বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। জাল সার্টিফিকেট ও মার্কশিট তৈরির অভিযোগে আজ সোমবার তাকেম গ্রেফতার করা হয় । টাকার বিনিময়ে মূল সনদ তৈরী করতে নিজ বাসাকে কারখানা বানিয়েছিলেন তিনি।
গ্রেফতারের পর রাজধানীর আগারগাঁও এবং পীরেরবাগ এলাকায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে (ডিবি) পুলিশ। অভিযান শেষে এবিষয়ে ডিবি মিডিয়া সেন্টারে বিস্তারিত জানাবে (ডিবি) পুলিশ। কারিগরি শিক্ষা সেলের সিস্টেম বাের্ডের এনালিষ্ট আর্কাইভ ও বাের্ডের ডাটা বেজ পরিবর্তন করে শিক্ষার্থীর জায়গায় নতুন ব্যক্তির নামে অনলাইন, মার্কসিট ও সনদ বাণিজ্যের অভিযােগ উঠেছিলো তার বিরুদ্ধে ।
এই ঘটনায় রাজধানীর মােহাম্মদপুর এলাকার আবুল হাকিম নামে এক কলেজ শিক্ষক সংশ্লিষ্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। প্রতি বছর এসএসসি (ভােকেশনাল, দাখিল) এবং এইচএসসি (বি.এম) পরীক্ষার আগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা বানিজ্য করতেন এই শামসুজামান। যে সব শিক্ষার্থী নবম শ্রেনী পাস করার পর আর পড়াশোনা করেনি সেই সব শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন নাম্বারে আগের নাম পরিবর্তন করে অন্য শিক্ষার্থীর নাম সংযোজন করে সরাসরি এস এস সি (ভােকেশনাল,দাখিল) এবং একাদশ শ্রণীর পর এইচ এস সি (বিএম) পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করিয়ে দেন। এতে প্রতি কাজের বিনিময়ে তিনি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিতেন ।
আর এই টাকা বিকাশ, রকেট ও নগদসহ বিভিন্নভাবে নেওয়া হতো । এর আগে ২০১৭ সালে শামসুজামান জালিয়াতির দায়ে চাকুরিচ্যুত হয়েছিলেন। পরে হাইকোর্ট ও অদৃশ্য শক্তির মাধ্যমে চাকরী ফিরে পান তিনি । চাকরি ফিরে পেয়ে তিনি আবারো বেপরােয়া হয়ে উঠেন। অভিযোগে আরাে বলা হয়েছে, টেলিটক সার্ভারের যেখানে অনলাইন আর্কাইভের তথ্য সংরক্ষণ করা হয়,সেখানে কোনো ডাটা পরিবর্তন করলে লগইন থাকবে এবং কবে কোন সময়, কি ডাটা পরিবর্তন করা হয়েছে তার প্রমানও সেখানে থেকে যায় । এতে প্রমাণ মিলে শামসুজামানের দায়িত্বে প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার শিক্ষার্থীর ডাটা পরিবর্তন করা হয়েছে।
টেলিটক আর্কাইভ সিস্টেমে প্রতিটি বোর্ডের জন্য একটি করে ইউজার অথেন্টিকেশন দেওয়া রয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট বোর্ডর শুধুমাত্র সিস্টেম এনালিষ্ট এর কাছে সংরক্ষিত থাকে। তাই সিস্টেম এনালিষ্ট ব্যতিত অন্য কারাে পক্ষে অনলাইনে তথ্য হালনাগাদ করার কোনো সুযােগ নেই। বিত্রি ও সাইবার সিকিউরিটির ব্যাপারে তদন্তের জন্য গত ১ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব আনিসুল ইসলামের স্বাক্ষরিত একটি পত্র দেওয়া হলেও অদৃশ্য কারণে তা বন্ধ হয়ে যায় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে না করে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের উপর দায়িত্ব অর্পন করা হয় ।
এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে বিগত ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর তথ্য সংগ্রহের জন্য আরও একটি পত্র প্রেরণ করা হয়। পত্রে শামসুজামানসহ আরো ৪ জনকে ওই একই তারিখে বিকাল ৩ টায় বিজিডি ই-গভ সার্ট, প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলেও তার কোনো কার্যকারিতা দেখা যায়নি।