দারুণ বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে মাত্র ১২৪ রানে আটকে রাখলেন বোলাররা। ইনিংস বিরতিতে প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় তাসকিন আহমেদের চোখে-মুখে উচ্ছ্বাস। ম্যাচ জেতার পর উদযাপন করার কথাও বললেন তিনি। কিন্তু তাওহিদ হৃদয়ের ঝড়ো ইনিংসের পরও বাকিদের ব্যর্থতায় জেগে উঠল শঙ্কা। শেষ পর্যন্ত দৃঢ়তার পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশকে জেতালেন মাহমুদউল্লাহ।
ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কাকে ২ উইকেটে হারাল বাংলাদেশ। ১২৫ রানের লক্ষ্য ৬ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলল তারা।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনবারের দেখায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয় এটি। টানা দুই ম্যাচ হেরে সুপার এইট খেলার সম্ভাবনা অনেকটাই ম্রিয়মাণ হয়ে গেল লঙ্কানদের জন্য। সামনের ম্যাচগুলোর জন্য বড় প্রেরণা পেল বাংলাদেশ।
ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ২২ রানে ৩ উইকেট নেন রিশাদ হোসেন। তার পরপর দুই বলে দুই উইকেটেই বোলিংয়ে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর শুরু। পরে শঙ্কা ছাপিয়ে জয় পাওয়ার পর ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তরুণ লেগ স্পিনারই।
বোলাররা নিজেদের কাজ করে দিয়েছেন। ৯ উইকেট তুলে নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ১২৪ রানের মধ্যেই আটকে দিয়েছেন রিশাদ-মোস্তাফিজ-তাসকিনরা।
আজ শনিবার ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নাম লঙ্কানরদের শিবিরে প্রথম আঘাত করেন তাসকিন আহমেদ। দলীয় ২১ রানের মাথায় ওপেনার কুশল মেন্ডিসকে (৮ বলে ১০) বোল্ড করেন টাইগার পেসার।
লঙ্কানদের ডেরায় দ্বিতীয় আঘাত হানেন মোস্তাফিজুর রহমান। দলীয় ৪৮ রানের মাথায় তিনে নামা কামিন্দু মেন্ডিসকে (৫ বলে ৪) তানজিম সাকিবের ক্যাচ বানান তিনি। আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কাকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান মোস্তাফিজ। ঝোড়ো ব্যাটিং করা এই ব্যাটার ফিফটিবঞ্চিত করেন টাইগার পেসার। ২৮ বলে ৪৭ রান করে ফেরত যান নিশাঙ্কা।
চারিথ আশালঙ্কার উইকেট তুলে নেন রিশাদ হোসেন। সাকিব আল হাসানের হাতে তালুবন্দি হওয়ার আগে এই লঙ্কান ব্যাটার করেন ২১ বলে ১৯ রান। পরের বলেই লঙ্কান অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে (১ বলে ০) নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান লেগস্পিনার রিশাদ। তবে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করতে পারেননি তিনি।
ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা টিকে থাকার চেষ্টায় থাকলে বেশিক্ষণ পিচে থাকতে পারেননি। ২৬ বলে ২১ রান করা এই ব্যাটার রিশাদের তৃতীয় শিকার হন। তাসকিনের বলে বিহাইন্ড দ্য উইকেটে ক্যাচ হন দাসুন শানাকা (৭ বলে ৩)।
মাহিশ থিকসানাকে রানের খাতাই খুলতে দেননি মোস্তাফিজ। ৩ বল খেললেও এই লঙ্কান ফেরত যান খালি হাতে। তানজিম হাসান সাকিবের শিকার হওয়ার আগে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ করেন ১৯ বলে ১৬ রান। এতে লঙ্কানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ১২৪ রান
৩টি করে উইকেট নেন রিশাদ ও মোস্তাফিজ। ২ উইকেট শিকার করেন তাসকিন। ১টি উইকেট নেন তানজিম হাসান সাকিব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১২৪/৯ (নিসাঙ্কা ৪৭, কুসাল ১০, কামিন্দু ৪, ধানাঞ্জয়া ২১, আসালাঙ্কা ১৯, হাসারাঙ্গা ০, ম্যাথিউস ১৬, শানাকা ৩, থিকশানা ০, পাথিরানা ০*, থুশারা ০*; তানজিম ৪-০-২৪-১, সাকিব ৩-০-৩০-০, তাসকিন ৪-০-২৫-২, মুস্তাফিজ ৪-০-১৭-৩, রিশাদ ৪-০-২২-৩, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৪-০)
বাংলাদেশ: ১৯ ওভারে ১২৫/৮ (তানজিদ ৩, সৌম্য ০, লিটন ৩৬, শান্ত ৭, হৃদয় ৪০, সাকিব ৮, মাহমুদউল্লাহ ১৬*, রিশাদ ১, তাসকিন ০, তানজিম ১*; ধানাঞ্জয়া *, থুশারা ৪-০-১৮-৪, থিকশানা ৪-০-২৫-০ হাসারাঙ্গা ৪-০-৩২-২, পাথিরানা ৪-০-২৭-১, শানাকা ১-০-১১-০)
ফল: বাংলাদেশ ২ উইকেটে জয়ী