রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
রংপুরে জমে উঠতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর হাট গুলির শব্দ শুনে থমকে গেলেন কৌতিনহো ভুয়া নম্বার প্লেটে চলছে ৭৮ হাজার যানবাহন গরমে ডিম খেলে কি শরীরের তাপ বাড়ে বিশ্বে প্রথম মানবদেহে সফলভাবে মূত্রথলি প্রতিস্থাপন যুক্তরাষ্ট্রে ডোবায় পড়ে দুই শিশুর মৃত্যু মুন্নী সাহা ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবে ১৮ কোটি টাকা অবরুদ্ধ কান চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫ : কান উৎসবে যাদের হাতে উঠল সেরার পুরস্কার সাবেক আইনমন্ত্রীর ‘বান্ধবী’ তৌফিকা করিমের বিরুদ্ধে মামলা বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যানকে মারধরের অভিযোগ হজযাত্রীদের হাজার বছরের পুরনো পথ যশোরে পালিত সন্তানের হাতে মা খুন বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবি বেনাপোল স্থলবন্দর পরিদর্শন করলেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ইউসুফ আলী পাইকগাছায় নালিশি সম্পত্তির বিরোধে তিন মহিলাকে পিটিয়ে আহত নবীনগরে লিচুর বিচি গলায় আটকে শিশুর মৃত্যু বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ সাতক্ষীরায় প্রান্তিক পেশাজীবীদের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত সালথায় চুরি-ছিনতাই বন্ধে এলাকাবাসীর সাথে পুলিশের মতবিনিময় আনোয়ারায় জেলেদের মাঝে মৎস্য খাদ্য ও বকনা বাছুর বিতরণ শেরে বাংলা গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড পেলেন যুগান্তরের সাংবাদিক আব্দুল মালেক শ্রীপুর গভীর রাত্রে ১’শ ৮৫ কেজি সয়াবিন তেলের ড্রাম চুরি নগরকান্দা উপজেলা দলিল লেখক সমিতির নির্বাচনে: সভাপতি জাহাঙ্গীর সম্পাদক হিরা পটুয়াখালী পৌর কর্তৃপক্ষের শতকোটি টাকার সম্পদ বেহাত পৌর প্রশাসন নিরব রাজারহাটে উপজেলা প্রকৌশলীর পদায়ন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত যশোরে মোটরসাইকেল সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য নিহত, আহত ২ হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের ২০ টি মামলার আসামী যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম ডাবলু গ্রেফতার লালমনিরহাটে অ্যাথলেটিক্স প্রশিক্ষণ-২০২৫ সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী নকল নবীস দাবি আদায় পরিষদ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে একনেক সভা শুরু

বিরোধপূর্ণ বিষয়ে মুমিনের যা করণীয়

অনলাইন ডেস্ক :
বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:৩১ পূর্বাহ্ন

ঢাকাপ্রতিদিন অন্যান্য ডেস্ক : ইসলামের মূল উদ্দেশ্য হলো, রাসুল (সা.)-এর সুন্নাহর অনুসরণ। কখনো কখনো কোনো ইবাদতে একাধিক সহিহ সুন্নাহর পদ্ধতি পাওয়া যায়, যাকে বলা হয় ইখতিলাফে তানাওউ অর্থাৎ বৈধ বিকল্পভিত্তিক ভিন্নতা, যা বিরোধ নয়, বরং শরিয়তের প্রশস্ততা। তবে পূর্বসূরি মুসলিম মনীষীরা আমাদের শিখিয়েছেন, যে এলাকায় বা যে মসজিদে যে পদ্ধতি প্রচলিত, সেখানে তা-ই বহাল রাখা উচিত। ভিন্ন সুন্নাহ প্রচার করে সাধারণ মুসল্লিদের বিভ্রান্ত করা বা ফিতনা সৃষ্টি করা অনুচিত।

ইমাম ইবনে আব্দিল বার (রহ.) বলেন, ইমাম মালেকের বর্ণনার ভিত্তিতে মদিনায় রাফয়ে ইয়াদাইন কেবল নামাজের শুরুতে করা হতো এবং সেখানকার উলামায়ে কিরাম প্রচলিত পদ্ধতির বিরোধিতা করতেন না। (আল-ইসতিযকার : ৪/১০১)

শায়খ বিন বাজ (রহ.) বলেন, যদি কোনো মুস্তাহাব আমল (যেমন—রাফয়ে ইয়াদাইন বা জোরে আমিন) দ্বারা মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়, তবে তা ছেড়ে দেয়াই উত্তম। রাসুল (সা.)-ও কাবা শরিফকে ইবরাহিম (আ.)-এর ভিত্তির ওপর নির্মাণ করেননি, কারণ তাতে কুরাইশের নব-মুসলিমদের মনে বিভ্রান্তির আশঙ্কা ছিল। (মাজমূউল ফাতাওয়া : ২৯/২৭৫-৩৭৪)

এ থেকেই শিক্ষা পাওয়া যায়, শরিয়তসম্মত হলেও যদি কোনো আমল ফিতনার কারণ হয়, তবে তা গোপন রাখা বা না করা শ্রেয়।

ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘এক এলাকায় এমন একটি মত প্রচলিত, যা শরিয়তসম্মত এবং অন্য একটি মতও শরিয়তসম্মত; তবে যদি ভিন্ন মতটি চর্চা করা ফিতনার কারণ হয়, তাহলে ওই মত প্রকাশ না করাই উত্তম।’ (আল-ফাতাওয়া আল-কুবরা : ২/৪৭) বর্তমান প্রেক্ষাপটে করণীয় ও সমাধান

ইখতিলাফি সুন্নাহর চর্চা নিয়ে বর্তমান সমাজে যে উত্তেজনা, বিভাজন ও অস্থিরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে, তা দ্বিন ও উম্মাহ উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। এই বাস্তবতায় কিছু বাস্তবসম্মত করণীয় নির্ধারণ করা জরুরি, যা আমাদের মধ্যকার ঐক্যকে সুদৃঢ় করবে এবং সুন্নাহর সঠিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করবে।

১. ফিকহি বহুমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা

বর্তমান বিভ্রান্তির অন্যতম প্রধান কারণ হলো খণ্ডিত জ্ঞান।

তাই মুসলিমদের উচিত ইলমে দ্বিন অর্জন করা, বিশেষ করে চার মাজহাবের ইজতিহাদ ও ইখতিলাফের মূলনীতি বোঝা। কোরআন বলছে, ‘তোমরা যদি না জানো, তাহলে জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা করো।’ (সুরা : আন-নাহল, আয়াত : ৪৩)
ইলম ছাড়া দাওয়াত শুধু নয়, বরং নিজের আমলও বিপদের মুখে পড়ে।

২. সুন্নাহর দাওয়াতে হিকমত ও বাস্তবতা বিবেচনা

সুন্নাহর আমল প্রচার করতে গেলে সংশ্লিষ্ট মসজিদ, সমাজ ও লোকদের মানসিকতা বুঝে ধীরে ধীরে, সৌন্দর্যের সঙ্গে তুলে ধরাই হলো সুন্নাহর প্রকৃত দাওয়াত। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘তোমার রবের পথে হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে দাওয়াত দাও।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১২৫) উগ্রতা, বিতর্ক ও হঠকারিতার মাধ্যমে নয়, বরং কোমলতা ও ধৈর্য দিয়েই মানুষকে সুন্নাহর দিকে টানতে হবে।

৩. ভিন্ন মত ও মাজহাব চর্চাকারীদের সম্মান বজায় রাখা

যিনি সহিহ হাদিস অনুসারে ভিন্ন কোনো সুন্নাহ পালন করছেন, তাঁকে কটাক্ষ নয়, বরং শ্রদ্ধা করাই হচ্ছে ইখলাস ও উম্মাহর ঐক্যের বহিঃপ্রকাশ। হাদিসে এসেছে, ‘এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই, সে তার প্রতি জুলুম করে না, তাকে একা ফেলে দেয় না।’ (সহিহ বুখারি : ২৪৪২)

এই ভ্রাতৃত্ববোধ সমাজে সুন্নাহভিত্তিক ভিন্নতাকে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে পরিণত করতে পারে।

৪. ইমাম ও আলেমদের দায়িত্বশীল ভূমিকা

মসজিদের ইমাম ও স্থানীয় আলেমদের উচিত কোনো ভিন্ন সুন্নাহর প্রচারে ফিতনার আশঙ্কা থাকলে তা সম্মিলিত পরামর্শে, ধৈর্যের সঙ্গে সামলানো। প্রয়োজনে কৌশলে ব্যক্তিগতভাবে বুঝিয়ে দেয়া, যাতে জামাতের ঐক্য বিনষ্ট না হয়।

৫. মিডিয়া ও দাওয়াতি প্ল্যাটফরমে সংযম

সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ভাই ‘সুন্নাহ প্রচার’-এর নামে বিদ্বেষমূলক ভিডিও, ফতোয়া ও তির্যক ভাষায় মন্তব্য ছড়ান, যা নবী (সা.)-এর নম্রতা ও দাওয়াতি পদ্ধতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। দায়বদ্ধ ও শরিয়তসম্মত দাওয়াতের পরিবেশ গড়ে তোলাই এখন সময়ের দাবি।

৬. সামগ্রিকভাবে উম্মাহর ঐক্যকে অগ্রাধিকার দেয়া

ফরজ ও ওয়াজিব ইবাদতের তুলনায় সুন্নাহর এমন ইখতিলাফি বিষয়গুলোতে উম্মাহর ঐক্যকে প্রাধান্য দেয়ার নীতিই ছিল সাহাবাদের। ইবনে তাইমিয়াহ (রহ.) বলেন, ‘ঐক্য ও সংহতি, বিভাজন ও মতবিরোধের চেয়ে উত্তম।’ (মাজমূউল ফাতওয়া : ২২/৪০৭)

পরিশেষে আমরা যদি সত্যিই সুন্নাহর অনুসারী হতে চাই, তবে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সেই চরিত্র ও হিকমতের অনুসরণ করতে হবে, যার মাধ্যমে উম্মাহ ঐক্যবদ্ধ হয়, বিভক্ত নয়।
ঢাকাপ্রতিদিন/এআর

 


এই বিভাগের আরো খবর